বৃহস্পতিবার, ৩১ Jul ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন

ভোলার ভয়াবহ কোকো লঞ্চ ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোলা প্রতিনিধিঃ আজ ২৭ নভেম্বর ভয়াবহ কোকো ট্র্যাজেডির এক যুগ পূর্তি। ভোলার ইতিহাসে শোকাবহ একটি দিন এটি। ১২ বছর আগে ২০০৯ সালের এই দিনে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলার লালমোহন উপজেলার নাজীরপুর ঘাটে কোকো লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৮১ জন যাত্রী প্রাণ হারান। পর দিন ছিল কোরবানীর ঈদ। সেই ঈদ বিষাদে রূপ নেয়। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় স্বজনহারা মানুষের কান্না আজও থামেনি।

সেই দিনের কথা মনে করে আজও আঁতকে ওঠেন অনেকে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মরণসভা ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

কোকো-৪ দুর্ঘটনায় লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে নূরে আলম সাগর, তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইয়াসমিন, শ্যালিকা হ্যাপি বেগম নিহত হন। নূরে আলম ঈদুল আজহা উপলক্ষে নববধূ ও শ্যালিকাকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। কিন্তু সেই দুর্ঘটনায় তিন জনই মারা যান। নববধূর ওই মরদেহের কথা মনে করতেই কেঁদে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। আব্দুর রশিদের পরিবারের মতো কোকো-৪ দুর্ঘটনায় স্বজন হারা অন্যরাও তাদের বাঁধ ভাঙা কান্নাকে চেপে রাখছেন কষ্টে। স্বজন হারানোর শোকে কাতর পরিবারগুলো এখনও বাকরুদ্ধ।

একই এলাকার বাকলাই বাড়ির শামসুন নাহার স্বামী, সন্তান, দেবরসহ বাড়ির ১৬ জনকে নিয়ে কোকো লঞ্চে রওনা হয়েছিলেন ঈদ করতে। বাড়ির কাছের ঘাটে এসেই লঞ্চ ডুবিতে নিহত হয় তার মেয়ে সুরাইয়া (৭), ভাসুরের মেয়ে কবিতা (৩) ও দেবর সোহাগ (১৩)। সেই থেকেই শামসুন নাহার আদরের মেয়ের শোকে কাতর। শামসুন নাহারের মতো কোকো-৪ লঞ্চ দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন বাবা-মা, কেউ হারিয়েছেন সন্তান, কেউবা ভাই-বোন আর পরিবারের উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তিকে। সেই মর্মান্তিক ট্রাজেডির কথা মনে করে শোক সাগরে ভাসছে পুরো লালমোহন।

লালমোহন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম জনি বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল লালমোহন উপজেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে শিশু ছিল ৩৬ জন। যদিও বর্তমানে ঢাকা-লালমোহন রুটে একাধিক বিলাসবহুল অত্যাধুনিক লঞ্চ চালু করা হয়েছে। ঘাটগুলোও করা হয়েছে আধুনিকায়ন। দুর্ঘটনায় সেসময় মেরিন আইনে দুটি মামলা দায়েরের কথাও জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com